ইন্টারভিউ বোর্ডে আত্মবিশ্বাসের সাথে মুখোমুখি হোন


 ইন্টারভিউ। চাকরি খুঁজতে গেলে ইন্টারভিউ বোর্ডের মুখোমুখি হতেই হবে। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন ইন্টারভিউ দিতে হবে, শুধুমাত্র এই ভয়েই চাকরির নাম মুখে আনেন না! কিন্তু একে বিভীষিকা মনে করার কোনো কারণই নেই, যদি আপনি এর মুখোমুখি হবার আগে সামান্য একটু হোমওয়ার্ক করে নেন।
ইন্টারভিউ বোর্ডে আত্মবিশ্বাসের সাথে মুখোমুখি হোন- 
১/বায়োডাটা বা রেজুমে-
প্রথমেই বলে নিই তাদের কথা যারা জীবনে প্রথম চাকরির ইন্টারভিউ দেবেন। প্রথম এবং সবচেয়ে যা প্রয়োজনীয় তা হলো বায়োডাটা বা রেজুমে। কোনোরকম মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে রেজুমেটা তৈরি করতে হবে। এর ভাষা যেন প্রতিষ্ঠানউপযোগী হয় সেদিকে খেয়াল রেখে যাবতীয় তথ্য পেশ করতে হবে। বানান, ব্যকরণ আর বাক্যের গঠন, সে তো বলাই বাহুল্য, নির্ভুল হতে হবে। সাথে আনুষঙ্গিক কাগজপত্র। সার্টিফিকেট, মার্কশীট, ছবি, রেফারেন্স লেটার ইত্যাদি ইত্যাদি। আর যারা চাকরি সুইচ করবেন তাদের বাড়তি যে কাগজটা যোগ করতে হবে, তা হলো এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট।
২/পরিষ্কার ধারণা –
পড়াশোনা এবং জানার কোনো বিকল্প নেই। যে চাকরির ইন্টারভিউ দেবেন সেই সম্পর্কে অবশ্যই পরিষ্কার ধারণা রাখবেন। হোক সেটা কোনো হাই প্রোফাইল কর্পোরেট জব কিংবা পাড়ার কোনো ছোটখাট স্কুলের সামান্য চাকরি। কিছু খুবই কমন প্রশ্ন, ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রায়ই করা হয় : কেন এই চাকরিতে আসতে চান অথবা আগের চাকরিটা কেন ছাড়ছেন। কিংবা আপনি কেন এই পোস্টের জন্য নিজেকে যোগ্য মনে করছেন। মনে মনে একটা সুন্দর গোছানো উত্তর তৈরি করে নিয়ে যাওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। ওখানে বসে আমতা আমতা করে প্রথম ধাক্কাতেই সব তাহলে গুবলেট হবে না।
৩/সময় মেনে চলা-
ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে অবশ্যই সময়মতো পৌঁছুতে হবে। সেজন্য হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে বের হোন। যানবাহন বা ট্রাফিক জ্যামের দোহাই কোনোই কাজে আসবে না। ইন্টারভিউ সাধারণত সকাল নয়টা-দশটার মধ্যেই শুরু হয়। তাই আগের রাত যেন ঘুমহীন না হয় সেদিকে পুরোমাত্রায় খেয়াল রাখুন।
৪/পোশাক-
খেয়াল রাখতে হবে পোশাকের দিকে। ভদ্র, শালীন, পরিষ্কার পোশাক বেছে নিতে হবে। শাইনি বা ফ্ল্যাশি পোশাক বাদ দিতে হবে। পোশাকের ক্রিজ আর রংও যথাযথ হতে হবে। কড়া পারফিউম বা উগ্র মেকআপ থেকে শতহাত দূরে থাকতে হবে। কথায় আছে ‘আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারি’। তাই চেহারায় ক্লান্তির ছাপ আর অরুচিশীল পোশাক অনেকসময় নেগেটিভ পয়েন্ট হিসেবে বিবেচ্য হয়।
৫/মানসিক দৃঢ়তা-
মানসিক দৃঢ়তা একটা ভাইটাল ফ্যাক্টর। সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অনেকে পছন্দের চাকরিতে মনোনীত হন না। ইন্টারভিউ বোর্ডে যেকোনো ধরনের প্রশ্ন হতেই পারে। অনেক সময় ইচ্ছা করেই অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে ক্যান্ডিডেটকে যাচাই করা হয়। সেধরনের পরিস্থিতিতে ঘাবড়ে না গিয়ে নার্ভ স্ট্রং রাখতে হবে, মোটেও উত্তেজিত হওয়া চলবে না। অহেতুক স্মার্টনেস জাহির করাও ঠিক না, আবার একেবারে নার্ভাস হওয়ারও কিছু নেই। সবচেয়ে খারাপ যা হবে তা হলো, চাকরিটা হয়ত হবে না। তো সেইজন্য প্রাণপাত করার কিছু নেই। ভুলত্রুটি শুধরে নিজেকে আরেকটু গুছিয়ে পরের ইন্টারভিউর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করুন। হয়ত পরের ইন্টারভিউর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার দরকারই হবে না। হয়তো তার আগেই পেয়ে যাবেন বহু আকাক্সিক্ষত চিঠি, যাতে প্রতিষ্ঠানের প্যাডে লেখা থাকবে, ‘আপনাকে অমুক পদে নিয়োগ দেয়া হলো!’

মন্তব্যসমূহ